গত ২৩ ডিসেম্বর রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে ধর্মপ্রদেশীয় সামাজকি যোগাযোগ কমিশনের আয়োজনে উদযাপিত হলো প্রাক–বড়দিন ২০২১ খ্রিস্টাব্দ। এতে রাজশাহী শহরের বিভিন্ন মিডিয়া কর্মী ও সাংবাদিকসহ বেশ কিছু সংখ্যক ফাদার সিস্টার ও খ্রিস্টভক্ত উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও’র সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, খ্রিস্টজ্যোতি মিডিয়া সেন্টারের পরিচালক ফাদার বাবলু সি. কোড়াইয়া। বড়দিনের তাৎপর্য তুলেন ভিকার জেনারেল ফাদার ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও। ’বড়দিন প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করেন কারিতাস বাংলাদেশ, রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মি: সুক্লেশ জর্জ কস্তা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মিডিয়া সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক ফাদর সুনীল রোজারিও। অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনা, বড়দিনের প্রীতি উপহার প্রদান, প্রাক বড়দিনের কেক কাটা, ধন্যবাদ জ্ঞাপন, কীর্তন ও জলযোগের পর সকলকে বিদায় সম্ভাষণ জানানো হয়।
আসন্ন বড়দিন উপলক্ষে আপনাদের সকলকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা উদযাপন করতে যাচ্ছি ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর অর্থাৎ শুভ বড়দিন। বিগত দুই বছর ধরে বিশ^বাসী একটি কঠিন বাস্তবতা অতিক্রম করছে। কোভিড–১৯ মহামারির ছোবল গোটা পৃথিবীকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু মানবজাতি তার পরেও থেমে নেই। এই কঠিন বাস্তবতাকে মোকাবেলা করে অনেকাংশেই মানবভাগ্যাকাশের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। তবে এ সবকিছুর পেছনে আমরা যদি একটি শক্তিকে অনুধাবন করি, তাহলে স্পষ্টই বুঝতে পারি; যিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা তিনিই আমাদের এই সমস্ত বিপদ–আপদ থেকে রক্ষা করেছেন। কেননা পবিত্র বাইবেলে স্বর্গদূত গাব্রিয়েল যিশুর সম্বন্ধে বলেছেন, “তিনি ইম্মানুয়েল”। যার অর্থ, ‘ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন। আর এই চেতনাকে আমরা বড়দিনের সময় আরো বেশি উপলদ্ধি করি। কেননা, ঈশ্বর তার পুত্রকে এ জগতে পাঠিয়েছেন– যেন ঈশ্বরের সাথে মানুষের, মানুষের সাথে মানুষের এবং মানুষের ও ঈশ্বরের মধ্যে মিলন ঘটাতে পারেন।
২০২১ খ্রিস্টাব্দ, বাংলাদেশ খ্রিস্টমণ্ডলির এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় বছর। কেননা, আজ থেকে ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ ক্যাথলিক মÐলির বিশপ কনফারেন্স (সিবিসিবি) তার যাত্রা শুরু করেছিল। আজ থেকে ৫০ বছর আগে বীর বাঙালি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জন করেছিল বাংলার রক্তিম সূর্য। লাল পতাকার দেশ, সোনার বাংলাদেশ। তার সূবর্ণজয়ন্তী এ বছর আমরা ঘটা করে পালন করেছি। এ বছর আমরা উদযাপন করেছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শতবর্ষের জন্মজয়ন্তী। প্রতিটি ঘটনাই মাণ্ডলিক জীবনে ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও কোভিড–১৯ এই ঘটনাগুলোকে ও মানব জীবনকে ম্লান করে দিতে চেয়েছিল; তবুও চার্চ ও রাষ্ট্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই গৌরবময় বিষয়গুলোকে সুন্দর ও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উদ্যাপন করেছেন। তাই ২০২১ খ্রিস্টাব্দের বড়দিন জাতি–ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও আনন্দ। সবাইকে জানাই শুভ বড়দিন ও নব বছরের প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
বরেন্দ্রদূত রির্পোটার