গত ৮ই মার্চ ২০২২ খ্রিস্টাব্দে রোজ মঙ্গলবার ‘লূর্দের রাণী মারীয়া, বনপাড়া ধর্মপল্লীতে “নারী পুরুষের সমতা, টেকসই আগামীর নিশ্চয়তা” এ মূলসুরের উপর ভিত্তি করে দিনব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উদযাপন করা হয়। পবিত্র খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু করা হয়। খ্রিস্টযাগে প্রধান পুরোহিত্য করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার লিপন প্যাট্রিক রোজারিও। তিনি তাঁর উপদেশে বলেন, “নারী মানে- ভালবাসা, প্রেম-প্রীতি, স্ত্রী, বোন ইত্যাদি”। তিনি আরো বলেন, “শুধু আমাদের মায়েদের নয়; বরং সব নারীদেরকে একই সমান, ভালবাসা ও সমমর্যাদা দেওয়া দরকার এবং আমরা যেন নারী ও পুরুষে ভেদাভেদ না করে নারী-পুরুষের সমতা বিধান করার লক্ষ্যে যে যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে যত্নবান হই”। খ্রিস্টযাগের পর রেলীর আয়োজন করা হয় এবং এই সমাবেশে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০ জনের মতো।
শ্রদ্ধেয় ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ “নারী পুরুষের সমতা, টেকসই আগামীর নিশ্চয়তা” মূলসুরের উপরে ভিত্তি করে তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, “আমরা নারীর অধিকার চাই; কিন্তু কিভাবে এই অধিকার আদায় করব তা প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে। তিনি আরো বলেন, নারীরা যেন নিজের উপর নির্ভরশীল হতে পারে; পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজের পাঁয়ে দাঁড়াতে আহ্বান করেন। তিনি বলেন, মায়েরা যেন তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে পড়াশুনা করার অনুপ্রেরণা দেন। আমরা যেন নারী-পুরুষ উভয়ই আলাদাভাবে না দেখি বরং একে অপরকে সম্মান করে একসাথে পথ চলি, সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি। নারীরা হলেন পরিবারের ‘লক্ষী’। একজন নারী পারে নিজের পরিবারকে গোছাতে; আবার ধ্বংস করতে। আমাদেরকে স্মরণে রাখতে হবে যে, ‘অধিকার নিতে হলে, অন্যকে দিতে হবে’। সিস্টার তৃপ্তি মেরী এসএমআরএ বলেন, “আমাদের সমাজের মেয়েরা অল্প বয়সে বিয়ে করে এবং পরে নির্যাতিত হয়। এই বিষয়ে আমাদেরকে অনেক সচেতন হতে হবে। আর আমরা নারীরা যেন প্রত্যেক নারীকে সম্মান করে চলি”। তিনি আরো বলেন, “আমরা পরিবারে শাশুড়িরা যেন বৌমাদের এবং বৌমারা যেন শাশুড়িদের প্রতি সম্মান দিয়ে চলি”। সন্ধ্যা পিরিচ বলেন, “১৯৯৬ সালে ৮ই মার্চ প্রথম বনপাড়াতে ‘নারী জাগরণ সংঘ গঠন করি’। তিনি সমাজের নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমরা নারীরা যেন নিজের পাঁয়ে দাঁড়াতে পারি এবং পরনির্ভরশীল না হই”।
পরে অংশগ্রহণকারী নারীদের মধ্যে বৌমা, বিধবা ও সফল মায়েদের পক্ষ থেকে তাদের নিজ নিজ বাস্তব ঘটনা সহভাগিতা করেন। দুপুরের খাওয়ার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয় এবং সিস্টার নৈবেদ্য এসএমআরএ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ করেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার: জের্ভাস মুরমু