গত ১৫ মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দে রোজ রবিবার ‘লূর্দের রাণী মারীয়ার ধর্মপল্লী, বনপাড়াতে ‘বিশ্ব আহ্বান দিবস’ উদযাপন করা হয়। খ্রিস্টযাগে পুরোহিত্য করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার লিপন প্যাট্রিক রোজারিও। খ্রিস্টযাগের পর নতুন গীর্জা থেকে রেলী করে পুরাতন গীর্জায় প্রবেশ করেন। এই দিবসে প্রায় ৩০০ জনের মতো যুবক-যুবতী উপস্থিত ছিলেন।
বনপাড়া ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার দিলীপ এস. কস্তা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। পরে মূলসুরের উপরে ভিত্তি করে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সিনোডীয় মণ্ডলিতে খ্রিস্টীয় আহ্বান (মিলন, অংশগ্রহণ এবং প্রেরণ)। মণ্ডলি মানে ‘একসাথে পথ চলা, যিশু খ্রিস্টের নামে একত্রিত হওয়া, সমবেত হওয়া’। কারা খ্রিস্টের মানুষ? তারাই যারা যিশুকে অনুসরণ করে। আন্তিয়োখ নগরে যারা যিশুকে বিশ্বাস করত। তারাই হলো প্রকৃত খ্রিস্টান। সিনোডে বলা হয়েছে যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সবাই মিলে একত্রে পথ চলি, মাণ্ডলিক কাজে অংশগ্রহণ করি এবং মঙ্গলসমাচার প্রচার করি। অর্থাৎ সকলের কাছে বাণী প্রচার করাই হল আমাদের প্রকৃত আহ্বান। তাই, সিনোড আমাদেরকে শিক্ষা দেয় এক হতে। খ্রিস্টও এক, মুক্তিদাতাও এক। তিনি আহ্বান সম্বন্ধে বলেন, আহ্বান হলো ডাক/ বিশেষ ডাক/ বিশেষ কাজের জন্য আহ্বান ও খ্রিস্টীয় জীবনে আহ্বান। আহ্বান তিন প্রকার: প্রথমত, ‘মৌলিক আহ্বান’। অর্থাৎ ‘সত্যের মানুষ হওয়া’। আমরা সবাই মানুষ। তাই মানবিক মানুষ হতে চেষ্টা করি। যার বিবেক নেই; সেই ধরণের মানুষ যেন না হই। কিন্তু আমরা যেন বিবেক সম্পন্ন মানুষ হই। দ্বিতীয়ত, আহ্বান হলো ‘ধর্মীয় চেতনায় ও মূল্যবোধে বেড়ে উঠা’। তৃতীয়ত, জীবনাহ্বান। ঈশ্বর আমাদেরকে জীবন দিয়েছেন। জীবন হলো সব চাইতে দামী/বড় উপহার। এই উপহার ঈশ্বরের দেওয়া অমূল্যদান।
সজিব পিউরীফিকেশন বলেন, “আহ্বান হলো ঈশ্বরের ডাক এবং এ ডাকে স্বাধীনভাবে ও স্বেচ্ছায় সাড়া দান। তবে এ ডাক শোনার জন্য আমাদের হৃদয়-মন খোলা রাখতে হবে। কেননা, ঈশ্বর আমাদের মধ্যদিয়ে এ জগতে কাজ করেন। তাই, আমি বা আমরা জীবনে যা কিছু করি বা বলি; সেটা যেন মানুষের জন্য কল্যাণকর হয়”। ফাদার লিপন প্যাট্রিক রোজারিও যাজকীয় জীবনে আহ্বান বিষয়ে বলেন, “আহ্বান হলো ধর্মীয় জীবনে প্রবেশ করার এক বিশেষ ডাক। ধর্মীয় জীবনের আহ্বান হলো-ফাদার, সিস্টার বা ব্রতধারী/ব্রতধারিণী হওয়ার ডাক। ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ তাঁর যাজকীয় জীবনের আহ্বান সর্ম্পকে সহভাগিতা করে বলেন যে- আমি আমার বাল্যকাল থেকেই চিন্তা ও ধ্যান করতাম কিভাবে আমি একজন যাজক হব ও প্রভুর দ্রাক্ষাক্ষেত্রে জনগণের জন্য কাজ করব? আর সেই চেতনা বা আহ্বান আমার জীবনে লালন করেই আজ আমি প্রভুর যাজক হিসেবে তারই দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছি।
শেষে পাল-পুরোহিত শ্রদ্ধেয় ফাদার দিলীপ এস. কস্তা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : জের্ভাস মুরমু