প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় বিশ্ব বেতার দিবস। এবছরও সারা বিশ্বে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। ইউনেস্কোর ঘোষণা অনুসারে এবার হলো ১২তম বিশ্ব বেতার দিবস। আর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের বেতার দিবসের বাণী হলো “বেতার এবং শান্তি।”

আজকের এই ডিজিটাল যুগের শুরুতে অনেকে ভেবেছিলেন রেডিও’র ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু এখন নিশ্চিত হয়ে বলা যায়- বিশ্বে এখনও সবচেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম হলো রেডিও। তড়িৎ গতিতে কোনো বার্তা বিশ্বের আনাচে কানাচে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে রেডিও এখনো সবার উপরে। বিশ্বের অন্যান্য মিডিয়াগুলো আজ অতি মাত্রায় কমার্শিয়াল, সে ক্ষেত্রে বেতারকে কমার্শিয়াল হওয়ার তেমন বেশি সুযোগ নেই। বেতারের লক্ষ্য শুধু শহর নয়- পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, গ্রাম-গঞ্জ, যেখানে মানুষের বসবাস রয়েছে, বেতার সেখানেই উপস্থিত।

ইউনেস্কোর সহযোগী দেশগুলোর অনুরোধে জাতিসংঘ ২০১২ খ্রিস্টাব্দে এক প্রস্তাব গ্রহণ ক’রে প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস পালনের ঘোষণা দেয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস পালনের পিছনের কথা হলো: জাতিসংঘের বেতার স্থাপিত হয়েছিলো ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ফেব্রুয়ারি। ইউনেস্কোর জরিপে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে এখনো ৪৪ হাজার বেতার কেন্দ্র পুরো মাত্রায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। সেই তুলনায় টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা এখনো মাত্র ২৮ হাজার। রেডিও আবিষ্কার করেছেন ইটালিয়ান বিজ্ঞানী জুলিয়েলমো মাকুর্নি, ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে। আর টেলিভিশন আবিষ্কার করেছেন ২১ বছর বয়সের মার্কিন বালক ফিলো টেইলর ফার্ন্সওয়ার্থ, ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে।

চলতি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে বেতার দিবসের মূল বাণী হলো, “বেতার এবং শান্তি।” অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও যুদ্ধ কখনোও শান্তি স্থাপন করতে পারে না। কিন্তু রেডিও তার সম্প্রচার প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে শান্তির বার্তা বহন করতে পারে। এছাড়া আদিকাল থেকেই দেখা গেছে, যারা আন্তর্জাতিক বেতার প্রতিষ্ঠানের শ্রোতা, দেশের সীমান্ত তাদের জন্য কোনো বেড়াজাল নয়। দেখা সাক্ষাৎ না হলেও তারা পরস্পর বন্ধু। তারা কখনোও তাদের এই বন্ধুত্ব রাজনৈতিক পর্যায়ে নিয়ে যায় না। রেডিও তাদের মধ্যে একতার, শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়। যারা বিশ্ব বেতারের সঙ্গে জড়িত, রেডিও’র ভাষায় তাদের বলা হয় ডি-এক্সার । যারা শুধু স্থানীয় বেতারের সঙ্গে তাদেরকে ডিএক্সার বলা হয় না। আজকের এই বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে বিশ্বের ডি-এক্সার ও শ্রোতাবন্ধুদের জানাই বিশ্ব বেতার দিবসের শুভেচ্ছা। নিজে বেতার শুনুন এবং অন্যকে শুনতে সাহায্য করুন।

 বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার সুনীল রোজারিও

Please follow and like us: