গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, সুরশুনিপাড়া ধর্মপল্লীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত প‍্যারিশ কাউন্সিলের সদস‍্য, ক‍্যাটিখিস্ট ও গির্জা মাস্টার নিয়ে সিনোডাল মণ্ডলিঃ খ্রিস্টবিশ্বাসের দায়িত্ব- মিলন, অংশগ্রহণ ও প্রেরণ’- মূলসুরের উপর সারাদিনব্যাপী ধর্মপল্লীর পর্যায়ে পালকীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৭০ জন ফাদার-সিস্টার, গ্রাম প্রধান, কাটেখ্রিস্ট-গির্জা মাস্টার অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল ক্ষুদ্র প্রার্থনা, শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের মধ‍্য দিয়ে সেমিনার শুরু হয়।

পাল-পুরোহিত ফাদার প্রদীপ কস্তা স্বাগত বক্তব্যে তুলে ধরেন সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহ। বিশপ মহোদয়ের পালকীয় পত্রের বিষয়গুলো সবাইকে অবহিতকরণ এবং ধর্মপল্লীর জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য। মিলনের মধ্য দিয়েই আমরা খ্রিস্টবিশ্বাসের দায়িত্বকে আরও ফলপ্রসূ করতে পারি।

মূলসুরের উপর উপস্থাপনা দিতে গিয়ে ফাদার বাবলু বিশপ মহোদয়ের পত্রের আলোকেই ব্যাখ্যা দান করেন। তিনি সহভাগিতায় তুলে ধরেন- খ্রিস্টবিশ্বাসী সবাই যিশুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ও পিতা, পুত্র, পবিত্র আত্মার নামে দীক্ষিত হয়ে মণ্ডলির সদস্য হন। মণ্ডলিতে সকলেরই সমান অধিকার ও দায়িত্ব। কেউ বড় নয়, কেউ ছোটও নয়, বরং সকলেই সমান কারণ খ্রিস্টই আমাদের সমান মর্যাদা দিয়েছেন- এক করে তুলেছেন। সাধু পলেন ভাষায়, “আমরাও তেমনি অনেক হয়েও, খ্রিস্টের সঙ্গে মিলনাবদ্ধ বলেই এক দেহ” (রোমীয় ১২:৫ক)। আমরা খ্রিস্টবিশ্বাসীরা অনন্ত জীবনই প্রত্যাশা করি বলেই সেই অনন্ত জীবনের যাত্রায় আমরা বিশ্বাসীগণ মিলে গড়ে তুলি একটি মিলন সমাজ। যেটা পোপ মহোদয়ের ভাষায় ‘সিনোডাল মণ্ডলি’। আমরা যে শুধু মণ্ডলির সদস্য, তা-নয় বরং আমরাই মণ্ডলি অর্থাৎ আমাদের নিয়েই মণ্ডলি। মণ্ডলিতে সকল সদস্যই সমান অর্থাৎ সমান মর্যাদা ও সকলেরই নিজ নিজ দায়িত্বও রয়েছে। প্রেরিত শিষ্যদের মত বিশপ ও যাজকদের দায়িত্ব হলো প্রার্থনা, ধ্যান, উপাসনা পরিচালনা ও গির্জার সেবাকাজ করা। আর খ্রিস্টভক্তগণের কাজ হলো মণ্ডলির বৈষয়িক বিষয়গুলি দেখা। আদি মণ্ডলির খ্রিস্টভক্তদের পথ অনুুসরণ করাই বর্তমান খ্রিস্টভক্তদের আহ্বান এবং সঙ্গে সঙ্গে সংঘবদ্ধ জীবন যাপন করা। মণ্ডলির সেবাকাজ পরিচালিত হয় খ্রিস্টভক্তদের ভালবাসায় ও উদার দানে। খ্রিস্টভক্তদেরই দায়িত্ব হলো নিয়মিত গির্জা-উপাসনায় যোগদান, পারিবারিক প্রার্থনা, ধর্মপল্লীর বিভিন্ন সেবাকাজে অংশ নেওয়া, সন্তানদের ধর্মশিক্ষা ও নৈতিক গঠন দিয়ে মানুষ করা, ইত্যাদি কাজের পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের প্রতি সহযেগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও দুপুরের আহারের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন

Please follow and like us: