১০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের চ্যান্সেলর ফাদার প্রেমু রোজারিও এবং দক্ষিণ ভিকারিয়ার প্রায় সকল ধর্মপল্লীর ফাদার, সিস্টার ও নির্দিষ্ট সংখ্যক খ্রিস্টভক্তগণের উপস্থিতিতে গোপালপুর ধর্মপল্লীতে দক্ষিণ ভিকারিয়া সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আসন গ্রহণ, শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, প্রার্থনা, গান ও বাণীপাঠের মাধ্যমে উক্ত সভার কার্যক্রম শুরু করা হয়। দক্ষিণ ভিকারিয়ার আহ্বায়ক ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরী সকলকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে বলেন, আমাদের ভিকারিয়ার সকল ধর্মপল্লী যেন সিনোডাল মণ্ডলির আলোকে মিলন, অংশগ্রহণ ও প্রেরণ কাজে একসঙ্গে পথ চলতে পারে। তারই জন্যে এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে আমরা বেঁছে নিয়েছি ‘সিনোডাল মণ্ডলি : মিলন, অংশগ্রহণ ও প্রেরণ।’ আমি সকলকে আহ্বান জানাই, যেন সক্রিয় অংশগ্রহণ করার মধ্যদিয়ে আমাদের এই সভা ফলপ্রসূ হয়ে উঠে।
অতঃপর প্রতিবেদন পাঠ করেন দক্ষিণ ভিকারিয়ার সেক্রেটারি মি” রতন পেরেরা। সকলের সম্মতিক্রমে প্রতিবেদনটি সভায় গ্রহণ করে নেওয়া হয়।
আলোচ্য সূচির একটি বিশেষ দিক্ ছিল বর্তমান পারিবারিক বাস্তবতা। এর প্রেক্ষিতে অনেকেই মত পোষণ করে বলেন, আমাদের পারিবারিক বন্ধন ঠিক রাখার জন্য প্রথমতঃ যে বিষয়গুলো দরকার তা হলো : প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় রোজারিমালা প্রার্থনা করা ও নিয়মিতভাবে খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণ করা।
এছাড়াও মিসেস সন্ধ্যা পিরিছ বলেন, পারিবারিক জীবনকে ঠিক রাখার জন্য মাঝে মধ্যে দম্পত্তি সেমিনার করা প্রয়োজন। সেইসাথে বিবাহ প্রশিক্ষণ ও পরিবার কল্যাণ পরিষদের মাধ্যমে পরিবার পরিদর্শন করার মধ্যদিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি করার জন্য সমস্যাগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সার্বিকভাবে সহায়তা প্রদান করা দরকার।
বনপাড়া ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস.কস্তা বলেন, পারিবারিক জীবনে সব কিছুর উর্ধ্বে রাখা দরকার ভালবাসাকে। কেননা, ভালবাসাই সবকিছু ঠিক ঠাক করে রাখে। তাই সেই ভালবাসার বন্ধনকে অটুট রাখার জন্য প্রতিদিনের পারিবারিক প্রার্থনা ও খ্রিস্টযাগের গুরুত্ব অপরিসীম।
রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের চ্যান্সেলর ফাদার প্রেমু রোজারিও প্রাক্ বিবাহ প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বলেন, ছোট্টবেলা থেকেই ছেলে-মেয়েদেরকে বিভিন্ন ধর্মশিক্ষা দান ও সাক্রামেন্তীয় শিক্ষা দান করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে যখন তারা বয়ঃসন্ধিকালে উত্তীর্ণ হয় তখনও তাদের বিবেক গঠনের জন্য নৈতিক শিক্ষা প্রদান করতে হবে। তৃতীয়ত পারিবারিক জীবন শুরু করার আগে প্রাক্ বিবাহ প্রশিক্ষণ একান্ত দরকার। কেননা, একজন মানুষকে সামগ্রিকভাবে শিক্ষা দিয়েই এই পারিবারিক জীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য মণ্ডলি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে এবং চতুর্থ ধাপে বিবাহত্তোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও চলমান থাকা দরকার বলে তিনি মাণ্ডলিক শিক্ষার উপর বিশেষ মতামত পোষণ করেন।
অতঃপর সকল আলোচনার পর দক্ষিণ ভিকারিয়ার আহ্বায়ক সকলের উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিশেষভাবে স্বাগতিক ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার দীপক, ওএমআইকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান তার সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার