নিজস্ব সংবাদদাতা

রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের যাজক মন্সিনিয়র মার্শেল ফিলিপ তপ্ন মাতৃধর্মপল্লী বেণীদুয়ারে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন। তিনি বিশদিন যাবৎ আইসিউতে অসুস্থতার সাথে লড়াই করে ২১ মে রাত আটটায় রাজশাহী মেডিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ছিয়াত্তর বছর।

২২ মে সকাল সাতটা ত্রিশ মিনিটে বিশপ হাউজে মন্সিনিয়র মার্শেল ফিলিপ তপ্নের আত্মার চিরশান্তি ও কল্যাণ কামনায় খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করা হয়। খ্রিস্টযাগে চ্যাঞ্চেলর ফাদার প্রেমু রোজারিও বলেন, মন্সিনিয়র মার্শেল তপ্ন ছিলেন একজন পবিত্র পুরোহিত। তার সাদামনের গুণাবলী আমাদের সবার জন্য আদর্শ। খ্রিস্টযাগের পর ফাদারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বিশপ হাউজ থেকে মন্সিনিয়রের মরদেহ নিয়ে যাওয়া যায় বেণীদুয়ার ধর্মপল্লীতে। সেখানে দুপুর একটায় খ্রিস্টযাগ উৎসর্গের পর মন্সিনিয়র মার্শেল ফিলিপ তপ্নকে কবরস্থ করা হয়। খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন ভিকার জেনারেল ফাদার ফাবিয়ান মারাণ্ডী।  উপদেশে ফাদার আন্তনী হাঁসদা বলেন, মন্সিনিয়র মার্শেল ফিলিপ তপ্ন ছিলেন একজন নির্মোহ, নির্লোভী এবং নিরহঙ্কারী যাজক। মন্সিনিয়র প্রত্যেকটি ধর্মপল্লীতে তার সহজ-সরল জীবনাচরণ দ্বারা জনগণের মন জয় করতে পেরেছেন। আর জনগণ খুব সহজেই ফাদারের সাথে মিশতো। অনেকের জীবনে মন্সিনিয়রের প্রভাব ছিলো ব্যাপক।

উল্লেখ্য যে, মন্সিনিয়র মার্শেল ফিলিপ তপ্ন বেণীদুয়ার ধর্মপল্লীর মিশনপাড়ার একটি মুণ্ডারী আদিবাসী পরিবারে ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বনানী মেজর সেমিনারীতে দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন সমাপ্ত করে যাজকীয় অভিষেক লাভ করেন ১ জানুয়ারি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে। মন্সিনিয়র মার্শেল বনপাড়া, সুইহারী সেমিনারীর পরিচালক, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী বিশপ হাউজ, বোর্ণী, আন্ধারকোঠা, রহনপুর, বাগানপাড়া ক্যাথিড্রাল, মুশরইল সেমিনারী ও কলিমনগর ধর্মপল্লীতে সেবা প্রদান করেছেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেন। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে মন্সিনিয়র মার্শেলকে মণ্ডলীর সন্মানসূচক মন্সিনিয়র উপাধি প্রদান করা হয়।

মন্সিনিয়রের ছোট ভাই রতন তপ্ন বলেন, আমার জীবনে ফাদার দাদার অবদান অনেক। তিনি শিশুদের প্রচণ্ড ভালবাসতেন। আমার শিশুকালে ফাদার দাদার সান্নিধ্যস্মৃতি আমি ভুলতে পারি না।

 

Please follow and like us: