বরেন্দ্রদূত সংবাদদাতা
রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের নবাই বটতলা ধর্মপল্লীতে মধ্য ভিকারিয়া কর্তৃক আয়োজিত খ্রিস্ট জন্মজয়ন্তীর সমাপনী উৎসব উদযাপিত হয়েছে। ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সমাপনী উৎসবে বিশপ জের্ভাস রোজারিও, মধ্য ভিকারিয়ার ধর্মপল্লীতে কর্মরত ফাদার, সিস্টার, কারিতাসের কর্মকর্তা ও খ্রিস্টভক্তসহ প্রায় তিন হাজার জনগণ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ থাকে যে, মধ্য ভিকারিয়ায় খ্রিস্ট জন্মজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১৫ মার্চ আন্ধারকোঠা ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সমাপনী উৎসবে বিভিন্ন ধর্মপল্লী ও প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ব্যানার, ফেস্টুন এবং বিভিন্ন পোশাকে পরিচ্ছিদিত হয়ে সবাই অংশগ্রহণ করেন। নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর হাইস্কুল প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণিল শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিভিন্ন কৃষ্টি-সংস্কৃতির মিশেলে সবাই মিশন প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হন। এরপর প্রাঙ্গণে চলতে থাকে বিভিন্ন ভাষায় গান, কীর্তন ও নাচ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুবিলী ক্রুশ আশির্বাদ প্রদান ও উদ্বোধন করেন বিশপ জের্ভাস রোজারিও। এরপর খ্রিস্ট জন্মজুবিলী বিষয়ে আলোচনা করেন ফাদার উইলিয়াম মুর্মু। তিনি বলেন, জুবিলী আমাদের ব্যক্তি জীবন, সমাজ ও মণ্ডলীর দিকে ফিরে তাকানোর অনুপ্রেরণা যোগায়। আমরা ঈশ্বরের নিকট থেকে বিভিন্ন অনুগ্রহ লাভ করি; আর জুবিলীর সময়ে সে অনুগ্রহের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। খ্রিস্ট জন্মজয়ন্তী একটি আনন্দের ঘটনা। আর এই ঘটনা যেন অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করে নিজের জীবনের পরিবর্তন ঘটাই।
জুবিলীর আধ্যাত্মিক প্রস্তুতিস্বরূপ খ্রিস্টভক্তদের জন্য পাপস্বীকার সংস্কারের ব্যবস্থাও করা হয়। জুবিলী সমাপনী খ্রিস্টযাগের উপদেশে বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, বাইবেলে সাত সংখ্যার গুরুত্ব রয়েছে। ঈশ্বর ছয়দিনে সৃষ্টি কাজ সমাধা করে সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিয়েছেন। আর এই সাতদিনের সাথে আরো সাত গুণ করে ঊনপঞ্চাশ সংখ্যা পাওয়া যায়। অর্থাৎ ঊনপঞ্চাশ বছরের পরের বছর হচ্ছে জুবিলী। পরবর্তীতে মণ্ডলী পঞ্চাশের অর্ধেক পঁচিশ বছরকেও জুবিলী হিসাবে উল্লেখ করে থাকে। জুবিলীর গভীর তাৎপর্য রয়েছে। আর খ্রিস্ট জন্মজুবিলীর দুই হাজার পঁচিশ বছর আমাদেরকে মন পরিবর্তন, ক্ষমা এবং আর্থিক, সামাজিক ও প্রকৃতির প্রতি ঋণ মওকুফের আহ্বান জানায়।
খ্রিস্টযাগের পর ছিলো দুপুরের আহার ও বিভিন্ন আদিবাসী কৃষ্টি-সংস্কৃতি অনুসারে সম্মিলিত নাচ ও কীর্তন।




