গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রোজ শুক্রবার, “দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবকের আহ্বান: কৃতজ্ঞ হও” এই মূলসুরের উপর ভিত্তি করে অর্ধদিবস ব্যাপী ধর্মপল্লীর ‘পালকীয় সম্মেলন’ সাধ্বী রীতা’র ধর্মপল্লী মথুরাপুরে আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরী, সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার স্বপন মার্টিন পিউরীপিকেশন, ধর্মপল্লীর সিস্টারগণ, পালকীয় পরিষদের সকল সদস্য-সদস্যা, অন্যান্য সংঘ (প্রভাত তারা, এসভিপি, মারিয়া সংঘ, বিসিএসএম, ওয়াইসিএস ইত্যাদি) থেকে দুই জন করে এবং প্রত্যেক গ্রাম থেকে ৮ জন করে প্রতিনিধিদের নিয়ে মোট ১১০ জন এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

সকাল ৮:৩০ মিনিটে খ্রিস্টযাগের মধ্যদিয়ে পালকীয় সম্মেলনের শুরু  করেন  পাল-পুরোহিত ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরী। উদ্বোধনী নৃত্য ও পাল-পুরোহিতের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, “ খ্রিস্টীয় জীবনের সবচেয়ে বড় আহ্বান হচ্ছে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা এবং আমাদের কাজ-কর্মের মধ্য দিয়ে তা প্রকাশ করা”। এ সম্মেলনের দুটি ভাগ ছিল- প্রথম ভাগে কর্মশালার মূলসুর: “দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবকের আহ্বান: কৃতজ্ঞ হও” এর উপর সহভাগিতা করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার যোহন মিন্টু রায়। তিনি তার সহভাগিতায় বলেন, “প্রত্যেকটি জিনিসের যেমন ভিত্তি রয়েছে, তেমনি খ্রিস্ট মণ্ডলির ভিত্তি হচ্ছে কৃতজ্ঞ হওয়া”। তিনি আরও বলেন, ঈশ্বর আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস অকৃপণভাবে দান করে যাচ্ছেন, তাই আমাদেরও তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।”

আর দ্বিতীয় ভাগে পোপ ফ্রান্সিস ২০২৩ সালে যে সিনোডের (Synod) আহ্বান করেন, সেই সিনোডাল চার্চের উপর সহভাগিতা করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার দিলীপ এস. কস্তা। তিনি প্রথমেই বলেন, Synod শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ Syn-hodus থেকে এসেছে যার অর্থ ‘একই সঙ্গে পথ চলা’। তিনি সিনোডের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কেও বলেন। তিনি তার সহভাগিতায় সিনোডের যে তিনটি বিশেষ দিক- মিলন(Communion), অংশগ্রহণ(Participation) ও প্রেরণ(Mission) রয়েছে, সে বিষয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। মিলন সম্পর্কে তিনি বলেন, “ একই শিক্ষা, দীক্ষা ও একই মণ্ডলির সদস্য হিসেবে আমাদের মিলন সমাজ গড়ে তোলা প্রয়োজন”। অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেন, “অংশগ্রহণ হলো একটি আহ্বান বা ডাক আর আমরা বিভিন্নভাবে এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে থাকি”। আর প্রেরণ হচ্ছে “আমরা যাতে একসাথে পথ চলতে পারি এজন্য আমাদের মণ্ডলিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে”। তিনি আরো বলেন, “ আমরা কেউই স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকি না। সাইকেলকে যেমন দাঁড়িয়ে থাকার জন্য চলমান থাকতে হয়, তেমনি আমাদেরকেও সামনের দিকে পথ চলতে হয় এবং আমাদের এ পথ চলা যেন হয় একসাথে।”

ফাদারদ্বয়ের সহভাগিতার পর অংশগ্রহণকারীদেকে গ্রাম ভিত্তিক কয়েকটি দলে বিভক্ত করা হয় এবং আলোচনার প্রেক্ষিতে তাদের দুটি করে প্রশ্ন দেওয়া হয়। তারা সেগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার পর দলীয় আলোচনার উত্তরগুলো পেশ করেন। শেষে পাল-পুরোহিত সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচী সম্পন্ন করা হয়।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার: রিজেন্ট মাইকেল হেম্ব্রম

 

 

Please follow and like us: