৩১শে মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দে রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭: ০০ মি. সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রী খ্রিস্টবিশ্বাসীদের জন্য খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করা হয় সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে। প্রধান পুরোহিত্য করেন শ্রদ্ধেয় ফাদার দিলীপ এস. কস্তা এবং উপস্থিত ছিলেন ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ, অধ্যক্ষ, সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ ও ফাদার পিউস গমেজ, মাধ্যমিক ইনচার্চ। পবিত্র খ্রিস্টযাগে প্রায় ৫৫০শ জন এবং অনুষ্ঠানে প্রায় ২৬শ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান মেলার মূল বিষয় ছিল: ‘শিক্ষা, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, তথ্য-প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা’।
এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রদ্ধেয় ফাদার দিলীপ এস. কস্তা এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ, অধ্যক্ষ, সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ। তাছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষক/শিক্ষিকাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘বিজ্ঞান বিভাগ ও মানবিক বিভাগ তোমরা যে বিভাগেই পড়াশুনা কর তোমাদের লক্ষ্য হতে হবে মানুষের মত মানুষ হওয়া। এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম অর্জন করা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর একটি নৈতিক দায়িত্ব। তাই, তোমরা যারা মানবিক বিভাগে পড়াশুনা করছ; তোমাদেরকে মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হতে চেষ্টা করতে হবে। আর যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করছ; তারাও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে নতুন নতুন দিক আবিষ্কার করে সমাজ ও দেশকে সেবা করবে। অর্থাৎ তোমরা যে বিভাগ নিয়েই পড়াশুনা কর না কেন সেটা কোন বিবেচ্য বিষয় নয়; আসল বিষয়টা হল যার যার স্থান থেকে যেন মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন সমৃদ্ধশালী মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হবে’। তিনি আরো বলেন, সব সময় তোমরা বিজয়ী হওয়ার জন্য চেষ্টা কর। কারণ, চেষ্টার অসাধ্য কিছুই নেই। সেই সাথে তিনি আরও বলেন- আজকের এই অনুষ্ঠানে যারা অংশগ্রহণ করেছো আমি তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আমি জানি, এই প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা করেছেন এমন অনেকেই দেশ-বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। একজন সেন্ট যোসেফ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা কখনো হারতে পারি না। অর্থাৎ, আমরা প্রত্যেকজনই যোসেফাইট। আমি বিশ্বাস করি যারা সামনে বসে আছ; তোমরাও ভাল পড়াশুনা করে একদিন এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম অর্জন করবে এই প্রত্যাশা রাখি।
সাধু যোসেফ-এর নামে স্কুলটির নাম রাখা হয়েছে সেন্ট যোসেফ স্কুল এন্ড কলেজ। আমরা যারা খ্রিস্টবিশ্বাসী আমরা বিশ্বাস করি যে, তাঁর মধ্যস্থতায় প্রার্থনা করলে প্রচুর পরিমানে আর্শিবাদ লাভ করব। সাধু যোসেফের মধ্যে প্রেম, ভালবাসা, দয়া-মায়া ছিল। আমরা যারা শিক্ষক/শিক্ষিকা আছি। আমরা যেন সাধু যোসেফের মত জীবন-যাপন করে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে ভাল গঠন দিতে পারি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফাদার দিলীপ এস. কস্তা বলেন, ‘শিক্ষা হলো চিন্তা করার সময় ও নিজেকে বিকশিত করার সময়। বিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে যে, বিজ্ঞান শুরুতে ২+২= ৪ হয়। ২+২= ৪ এর সাথে আরো অনেক কিছু যোগ হয়। এর সাথে সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত, নাটক, লোকগীতি, মানুষের বিশ্বাস ও ভক্তি-ভালবাসা ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পড়াশুনার সাথে অন্যান্য বিষয়াদি আছে সেগুলো বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয়, সরকার থেকে দেয়া হয়। তাহলে আমাদের উচিত এই সুযোগ গুলো জীবনের জন্য গেঁথে রাখি এবং অনুশীলন করি। অনেকে পড়াশুনা করে কিন্তু পারে না। সবার নাম স্মরণীয় হয়ে থাকে না। স্মরণীয় হয় তারাই যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। তাই শিক্ষা হলো ‘দেশের জন্য সম্পদ হওয়া, সমাজের জন্য সম্পদ, ও অন্যের জন্য কাজ করা’। সে জন্য বলা হয় ‘শিখ ও সেবা কর’। তাই, শিক্ষার্থীদের সবাইকে আহ্বান জানায় যে, সাধু যোসেফ একজন সৎ ও ধার্মিক মানুষ ছিলেন। তিনি শিক্ষিত ছিলেন না। কিন্তু বাধ্য থেকে জীবনকে অতিবাহিত করেছেন। তাই, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি বাধ্য থেকে সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলে এবং নতুন নতুন শিক্ষা জীবনের জন্য আমাদের অন্তরে গেঁথে রেখে জীবন পথে এগিয়ে চলি।
তারপর বির্তক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সকল ছাত্র-ছাত্রী নাচ, গান, ছড়া গান, কবিতা আবৃত্তি একক অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেন। শেষে ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজ অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। যারা এই অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করার জন্য অবিরাম পরিশ্রম করেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সেইসঙ্গে সকল অভিভাকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার: জের্ভাস মুরমু