মুক্তিদাতা হাই স্কুল, বাগানপাড়া, রাজশাহী এর আয়োজনে গত ১২ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ তিন দিন ব্যাপী আনন্দে উৎসাহে ও ভাবগাম্ভির্য সহকারে আন্তঃ ক্লাস বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-কৃষি-ভূগোল ও শিল্পসংস্কৃতি মেলা এবং শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত তিন দিন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অতি আনন্দঘন ও উৎসব মুখর পরিবেশ মুক্তিদাতা স্কুল অতিবাহিত করে। প্রথম দিন বিজ্ঞান মেলার শুভ উদ্বোধন ও প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করার কথা যদিও রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও এর উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বিশেষ কারণ বশতঃ তিনি অনুপস্থিত থাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিকার জেনারেল, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ এবং মুক্তিদাতা হাই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো: আব্দুল সামাদ মন্ডল, অধ্যক্ষ (অবসরপ্রাপ্ত), সরকারী বি.এড. কলেজ, রাজশাহী এবং অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাদার রঞ্জন পিউরিফিকেশন, সিএসসি, প্রধান শিক্ষক, মুক্তিদাতা হাই স্কুল। অনুষ্ঠানের প্রথমেই অতিথিদের আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে মঞ্চে নিয়ে আসন গ্রহণ করানোর পর তিন ধর্মের আলোকে বিশেষ প্রার্থনা, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ জাতীয় সংগীত, শান্তির প্রতীক পায়রা উড়ানো, জ্ঞানের প্রতীক প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, উদ্বোধনী নৃত্য, ব্যাচ, ফুলের তোড়া ও উত্তোরিয় প্রদানের মাধ্যমে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন যে, কেবল মাত্র বইয়ের জ্ঞানই মানুষকে জ্ঞানী করে না, বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মনস্ক হয়ে উঠবে এবং বিজ্ঞান মনষ্ক হলে তাদের মধ্য থেকে কুপমন্ডুতা বা কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাসও থাকবে না। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অবশ্যই আমাদের বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষার্থী উঠতে হবে। গবেষণা-ধর্মী পড়ালেখাই আমাদের সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে। মুক্তিদাতা স্কুল চমৎকার একটি পদক্ষেপ নিয়েছে যার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার উদয় হবে।

বিশেষ অতিথি ও সভাপতি মহোদয়ও তাদের বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন। অতঃপর অতিথিদের সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হয়। অতিথিবৃন্দ ফিতা কেটে বিজ্ঞান মেলার শুভ উদ্বোধন করে ৪৩টি প্রজেক্ট পরিদর্শন করেন এবং প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী তাদের প্রজেক্ট উপস্থাপন করে।

পরের দিন ১৩ মার্চ রোজ বুধবার দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন ও প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন মি. স্বপন মন্ডল, সিনিয়র ম্যানেজার, রাজশাহী এ.সি.ও, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, রাজশাহী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিকার জেনারেল, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ এবং মুক্তিদাতা হাই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, এবং অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাদার রঞ্জন পিউরিফিকেশন, সিএসসি, প্রধান শিক্ষক, মুক্তিদাতা হাই স্কুল। অনুষ্ঠানের প্রথমেই অতিথিদের আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে মঞ্চে নিয়ে আসন গ্রহণ করানোর পর সার্বজনীন প্রার্থনা, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ জাতীয় সংগীত, জ্ঞানের প্রতীক প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, উদ্বোধনী নৃত্য, ব্যাচ, ফুলের তোড়া ও উত্তোরিয় প্রদানের মাধ্যমে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন যে, দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবার ইত্যাদির পরিচয় বহন করে সংস্কৃতি। যাদের সংস্কৃতি যত বেশী সম্বৃদ্ধি তারা তত উন্নত। তাই আমাদের প্রত্যেকেই সংস্কৃতিতে সম্বৃদ্ধ হওয়া উচিত। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিনি ধন্যবাদ দিয়ে বলেন যে, এই ধরনের উদ্যোগ অনেক প্রশংসার দাবিদার। এর মাধ্যমে অনিক শিক্ষার্থী সংস্কৃতমনা হয়ে উঠবে। তাদের সুপ্ত প্রতিভা গুলো জাগ্রত হবে। বিশেষ অতিথি ও সভাপতিও তাদের বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক বিষয়ে আরো বেশী চর্চা করতে উৎসাহ প্রদান করেন। অতঃপর অতিথিদের সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীবৃন্দ সতঃস্ফূর্ত ভাবে আবৃত্তি, গান, Action Song, নৃত্য, উপস্থিত বক্তব্য, একক অভিনয়, ধারাবাহিক গল্প বলা, দেশাত্ববোধক গান, দলিয় নৃত্যের মতো বিষয় গুলো চমৎকারভাবে উপস্থাপন করে তাদের প্রতিভা ফুটিয়ে তুলে।

বার্ষিক বিজ্ঞান মেলা এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন ভিকার জেনারেল, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ এবং মুক্তিদাতা হাই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডী, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মি. অসীম ক্রুশ, প্রোগ্রাম অফিসার, কারিতাস বাংলাদেশ, রাজশাহী অঞ্চল, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাদার রঞ্জন পিউরিফিকেশন, সিএসসি, প্রধান শিক্ষক, মুক্তিদাতা হাই স্কুল। অনুষ্ঠানের প্রথমেই অতিথিদের মঞ্চে আসন গ্রহণ করানোর পর ব্যাচ, ফুলের তোড়া ও উত্তোরিয় প্রদানের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয়। অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তাদের মনের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অতঃপর অতিথিদের সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় নার্সারী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৯৯ জন শিক্ষার্থকে বিভিন্ন পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে তিন দিনের কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ব্রাদার রঞ্জন পিউরিফিকেশন, সিএসসি

Please follow and like us: