আজ ০৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে কারিতাস রাজশাহী অঞ্চলের ফরমেশন অব ইয়ুথ এন্ড টিচার্স প্রোগ্রাম (এফওয়াইটিপি) এর অধীনে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার সেন্ট রীটাস্ হাইস্কুলে ‘আন্তঃস্কুল বিজ্ঞানমেলা, বিতর্ক এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মি. সেবাষ্টিন রোজারিও, নির্বাহী পরিচালক, কারিতাস বাংলাদেশ এবং সভাপতিত্ব করেন ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরী, সভাপতি, সেন্ট রীটাস্ হাই স্কুল, মথুরাপুর, চাটমোহর, পাবনা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় শিক্ষা কমিশনের সেক্রেটারি, ফাদার দিলীপ এস.কস্তা, মথুরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ শাহ্ আলম, এবং কারিতাস বাংলাদেশ রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মি. ডেভিড হেম্ব্রম প্রমুখ।

প্রতিযোগিতায় নাটোর জেলার সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ, বনপাড়া; সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়, জোনাইল; মরিয়ম হাইস্কুল, নাটোর এবং পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার সেন্ট রীটাস্ হাইস্কুল ও সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স জুনিয়র হাইস্কুল ফৈলজানা হতে মোট ১১৩ জন প্রতিযোগী ১৫টি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। বিভিন্ন ইভেন্টের মধ্যে আধুনিক কৃষি, জীব বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং চারু ও কারুশিল্প প্রযুক্তির স্টল প্রদর্শন এবং একক সংগীত, দলীয় নৃত্য, কবিতা আবৃতি, উপস্থিত বক্তৃতা, ধারাবাহিক গল্প বলা, একক অভিনয়, ইংরেজিতে ৩০০ শব্দের মধ্যে রচনা লেখা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা ছিল উল্লেখযোগ্য। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অতিথি, অভিভাবক, শিক্ষক, কারিতাস প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধিসহ সহস্রাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করেন যুব ও শিক্ষক গঠন কর্মসূচি, কারিতাস রাজশাহী অঞ্চল ও ধর্মপ্রদেশীয় শিক্ষা কমিশন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ।

সর্ব প্রথম আগমন, রেজিস্ট্রেশন ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের সকালের নাস্তা প্রদান করা হয়। এরপর সেন্ট রীটাস্ হাই স্কুলের প্রধান ফটক থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নৃত্যের মাধ্যমে সকল অতিথিদের নিয়ে আসা হয়। তারপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং প্রধান অতিথি, সভাপতি, বিশেষ অতিথি ও অতিথিবৃন্দ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন এবং পর্যায়ক্রমে সবাই আসন গ্রহণ করেন। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে সেন্ট রীটাস্ হাই স্কুলের ৬ষ্ঠ (গ) শ্রেণির শিক্ষাথী মোসাঃ দোলা খাতুন, পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করে ৯ম (ঘ) শ্রেণির শিক্ষার্থী মানসী গমেজ ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করে ১০ম (ক) শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রীতম কুমার দাস।

উদ্বোধনী নৃত্য ও ফুলের তোড়ার মাধ্যমে প্রধান ও বিশেষ অতিথি ও অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। তারপর স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিস্টার মেরী খ্রিষ্টেল কোড়াইয়া এস.এম.আর.এ, প্রধান শিক্ষক, সেন্ট রীটাস্ হাই স্কুল। তিনি সকলকে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বক্তব্য শুরু করে বলেন, ঋতুরাজ বসন্তের শুভেচ্ছা এ যেন এক মিলন মেলা। মেলা হলো মিলন তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধরণের মেলা রয়েছে যেমন: বৃক্ষ মেলা, বই মেলা তবে গুরুত্বপূর্ণ মেলা হলো বিজ্ঞান মেলা যা শিক্ষার্থীর ক্ষুদে মনকে বিকশিত করে বড় কোন বিজ্ঞানী, বড় কোন সাহিত্যিক, গল্পকার হওয়ার। এই বিজ্ঞান বর্তমান বিশ্বকে করে তুলেছে স্মার্ট। যা বিজ্ঞান ছাড়া কল্পনা করা যায় না। সকল শিক্ষক ও অন্য বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষককে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মি. ডেভিড হেম্ব্রম, আঞ্চলিক পরিচালক কারিতাস রাজশাহী অঞ্চল বলেন, আমি একটি বই পড়েছিলাম শব্দাতীর অবসান, আসলে মানুষ আগে এত কিছু দেখে নাই। তবে বহুমাত্রিক জ্ঞানের প্রয়োজন আছে। শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করাই প্রধান লক্ষ্য নয়, জ্ঞান চর্চাই প্রধান উদ্দেশ্য। এরপর বক্তব্য প্রদান করেন জনাব মোঃ শাহ্ আলম চেয়ারম্যান, মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদ, চাটমোহর, পাবনা। তিনি বলেন, আমরা এখানে এসেছি মূলত জ্ঞান অর্জন করার জন্য। পরে বক্তব্য প্রদান করেন ফাদার দিলীপ এস.কস্তা সেক্রেটারি, ধর্মপ্রদেশীয় শিক্ষা কমিশন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ। তিনি বলেন, বিজ্ঞান, বির্তক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত। সম্প্রতি জাপান দেশের শিক্ষা হলো বিজ্ঞান ও কারিগরী শিক্ষা। শিক্ষার্থী যেন সার্বিকভাবে বেড়ে উঠে। তখনই স্মার্ট বাংলাদেশ হবে যখন আমরা নিজেরা স্মার্ট হবো।

এর পরেই বিভিন্ন ইভেন্টের প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং বিষয়ভিত্তিক বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলি তাদের তীক্ষ্ণ বিচার বুদ্ধির মাধ্যমে বিজয়ীদের নির্বাচিত করেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান করেন সভাপতি, প্রধান অতিথি এবং আমন্ত্রিত অতিথিগণ। অতঃপর অদ্যকার আন্তঃস্কুল বিজ্ঞানমেলা, বিতর্ক এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর সভাপতি শ্রদ্ধেয় ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরী সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ভিনসেন্ট চঁড়ে

Please follow and like us: