গত ১৫ মার্চ বিকাল ৪.৩০ মিনিটে মুশরইল ধর্মপল্লীর উদ্যোগে সেমিনারী ও মারিয়া সেনা সংঘের অভিনয়ে সন্তোষপুর গির্জা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো জীবন্ত ক্রুশের পথ। যিশু আমাদের পাপের জন্য নিজের কাঁধে ক্রুশ নিয়ে যে যাতনাভোগ করেছেন তা অন্তরে উপলব্ধির জন্য এই জীবন্ত ক্রুশের পথ করা হয়। উল্লেখ্য উক্ত অনুষ্ঠানে দুইজন ফাদার, একজন সিস্টার, ১২ জন সেমিনারিয়ানসহ প্রায় ৩০০ জন খ্রিস্টভক্ত উপস্থিত ছিলেন।
জীবন্ত ক্রুশের পথের শুরুতে পাল-পুরোহিত বলেন,” আজ আমরা যে ভক্তির অনুষ্ঠান অর্থ্যাৎ জীবন্ত ক্রুশের পথে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি আমরা যেন সুন্দরভাবে অংশগ্রহণ করি। অনুরোধ করি, আমরা সকলে যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রার্থনাপূর্ণভাবে ক্রুশের পথে অংশগ্রহণ করি।”
প্রায় ১.৪৫ মিনিটের জীবন্ত ক্রুশের পথে সকলে প্রার্থনাপূর্ণ পরিবেশে অংশগ্রহণ করে এবং আবেগাপ্লুত হয়। অনেকে হায় হায় প্রভু বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে। একজন মহিলা রুমি হেম্ব্রম ক্রুশবিদ্ধ যিশুর পায়ে পড়ে কান্না করতে থাকে। পরে তার অনুভূতি জানতে চাইলে সে বলে,” আজ এই জীবন্ত ক্রুশের পথ দেখে সত্যি আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমাদের পাপের জন্য যিশু কতকষ্ট সহ্য করেছেন কিন্তু আমি বারংবার পাপ করে যিশুকে কষ্ট দেই এবং ক্রুশে বিদ্ধ করি।”
একজন বৃদ্ধা মহিলা কার্মেলা হেম্ব্রম বলেন,” আমার খুব কষ্ট লাগছে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর কষ্ট দেখে।অভিনয় দেখে যিশুর কষ্ট অনেকটা বুঝতে পারছি। “
একজন যুবতী মিষ্টি বিশ্বাস বলেন,” আজ আমার খুব ভালো লেগেছে যিশুর চরিত্র কে নিয়ে জীবন্ত ক্রুশের পথ দেখে। চেষ্টা করব পাপ না করে ভালো কাজ করতে।
”
যিশুর চরিত্রে অভিনয়কারী ভূবন স্টিফেন কোড়াইয়া ও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয়কারীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ” যিশু আমাদের জন্য কত কষ্ট সহ্য করেছেন। কিন্তু আমরা তা অভিনয়ের মধ্য দিয়ে কেবল ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। আমরা যে জনগণকে উপলব্ধি করাতে এবং নিজেরা উপলব্ধি করতে পেরেছি এটাই আমাদের স্বার্থকতা।”
পরিশেষে, মুশরইল ধর্মপল্লীর প্রতিপালক ফাদার প্রশান্ত আইন্দ বলেন,” আসলে যিশুর যাতনাভোগ দেখে আমিও অনেক কষ্ট পাচ্ছি। সত্যি অনেক সুন্দর হয়েছে। সবকিছু সুন্দর ভাবে ব্যবস্থা করার জন্য সন্তোষপুর গ্রামকে ধন্যবাদ জানাই এবং মুশরইল সেমিনার ও ধর্মপল্লীর যারা অভিনয় করেছেন সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। এখানেই এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। সবাই ভালো থাকবেন।”
বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার – লর্ড রোজারিও