৬-৮ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাজশাহী পালকীয় সেবাকেন্দ্রে অষ্টম শ্রেণীর মেয়েদের জন্য ‘খ্রিস্টবিশ্বাসীর দায়িত্ব: যিশুর আহ্বানে সাড়াদান’-মূলসুরের উপর ভিত্তি করে আহ্বান বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হয় রাজশাহী ধর্মপ্রদেশীয় যাজকীয় ও ব্রতধারী/ব্রতধারিনীদের জন্য কমিশনের উদ্যোগে। এতে ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন।

পবিত্র আরাধনা, উদ্বোধনী পর্বে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শুভেচ্ছা নৃত্য, শুভেচ্ছা বক্তব্য, পরিচিতি পর্ব ও আহ্বান বিষয়ক ভিডিও চিত্র প্রদর্শণী মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী ঘোষণা করা হয়।

মূলসুরের উপর সহভাগিতা রাখেন সিস্টার মেরী আরতি, এসএমআরএ। তিনি সহভাগিতায় তুলে ধরেন, যিশুর আহ্বানে সাড়াদানের জন্য দরকার যিশুর সাথে মিলিত হওয়া প্রার্থনায়, দয়ার কাজে ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ছোট বয়স থেকে অন্তরে যিশুর আহ্বান উপলদ্ধি করে সেইভাবে জীবন-যাপন করা।

‘ধর্মীয় জীবন আহ্বানে সাড়াদানে করণীয় দিক’ – বিষয়ে সহভাগিতা করেন ফাদার সাগর কোড়াইয়া। ধর্মীয় জীবন আহ্বানে সাড়াদানে করণীয় দিক বুঝানোর জন্য বাইবেলের বিভিন্ন উক্তি, ঘটনা ও গল্প ও প্রেরণামূলক ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন। জীবনের আহ্বান আবিষ্কার করার জন্য দরকার প্রার্থনা, গল্প করা, অন্যের জীবন দেখা। ঈশ্বরের ডাক শুনতে হয় ব্যক্তির মধ্য দিয়ে ও নিজের অন্তরে। সিস্টারদের জীবন ভালো লাগলে, এই জীবনের টান অনুভব করলে বুঝতে হবে ঈশ্বর আমাদের ব্রতীয় জীবনে আহ্বান করছেন।

বিভিন্ন সিস্টার সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ ১০ মিনিট করে সময় পান নিজ নিজ সম্প্রদায়ের ক্যারিজম তুলে ধরার ভিডিও চিত্রসহ সহভাগিতার মাধ্যমে।

পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ডিডি সহভাগিতা তুলে ধরেন, আহ্বান জীবনে প্রবেশ করার জন্য কয়েকটি দিক গুরুত্ব দিতে হবে-  প্রার্থনা, অলসতা দূর, আরাম-আয়েসের জীবন পরিহার, মোবাইল-টিভি দেখা হতে যতটা সম্ভব দূরে থাকা, ধর্মপল্লীর ফাদার-সিস্টারদের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং যিশুর জন্য সব সময় নিজে দিতে প্রস্তুত থাকা ঠিক মা মারিয়ার মতো বলা আমি প্রভুর দাসী আপনি যা বলেছেন আমার তাই-ই হোক।

ফাদার মাইকেল ও ফাদার বাবালু কোড়াইয়া সহভাগিতায় বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় যিশুর আহ্বান উপলদ্ধি করে সাড়াদান যদিও কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। যিশু আমাদের সবার দিকেই হাত বাড়িয়ে রয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, আমরা কী প্রস্তুত তার ডাকে সাড়া দিতে?

দলীয় আলোচনায় তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে ২টি প্রশ্নের আলোকে আলোচনায় উঠে আসে- আহ্বানে সাড়াদানে বাঁধা বা চ্যালেঞ্জসমূহ হলো- পরিবারে প্রার্থনার অভাব, অলসতা, আর্থিক সমস্যা, মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত আসক্তি, অধৈর্য্য, ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণ করতে দিতে পিতা-মাতার উৎসাহের অভাব, পরিবারে ফাদার-সিস্টার জীবন নিয়ে সমালোচনা, ত্যাগী মনোভাবের অভাব, পরিবারগুলো ছোট হয়ে যাওয়া (এক ছেলে বা এক মেয়ে), ছোটবেলা হতেই বাহ্যিক পেশার দিকে সন্তানদের অনুপ্রাণিত করা ও ইচ্ছা স্বাধীনভাবে চলার প্রবণতা। এইসব বাধা দূর করার উপায়সমূহ- প্রার্থনায় মনোযোগ বাড়ানো, নিয়মিত গির্জায় অংশগ্রহণ, ত্যাগী মনোভাব গড়ে তোলা, পরীক্ষা-প্রলোভন জয় করা, ফোনে আসক্তি কমানো, বাবা-মার ধর্মীয় আহ্বান সম্পর্কে ইতিবাচক সাড়াদান, অন্যের জন্য কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয়ী হওয়া এবং খারাপ পথকে এড়িয়ে চলা।

উক্ত কমিশনের আহ্বায়ক ফাদার মাইকেল কোড়াইয়ার ধন্যবাদ বক্তব্য সমাপন খ্রিস্টযাগের মাধ্যমে সেমিনারের ইতি টানা হয়।

বরেন্দ্রদূত রিপোর্টার : ফাদার স্বপন পিউরীফিকেশন

Please follow and like us: